মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন দুই দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি পালন করছে। ২১ ফেব্রæয়ারির প্রথম প্রহরে চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে অস্থায়ী শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার মধ্য দিয়ে দিবসের মূল কর্মসূচি শুরু হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। আজ ২১ ফেব্রæয়ারি মঙ্গলবার সকাল ৭টায় শহিদ মিনারের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিদ্যালয় মহাবিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগ দপ্তর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের অংশ গ্রহণে প্রভাতফেরি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে সকাল ১০টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে ও সহকারী কমিশনার (ভূমি-সদর) রাজিব হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ আমিনুর রহমান এনডিসি। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আনোয়ার হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার এস. এম শফিউল্লাহ্, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর আহমদ, জেলা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এ. কে. এম. সরোয়ার কামাল দুলু। চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের পদস্থ কর্মকর্তা, সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, প্রতিনিধি, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকসহ অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে দিবসটি উপলক্ষে জেলা শিল্পকলা ও শিশু একাডেমিতে শুদ্ধ বানান, হাতের সুন্দর লেখা, কুইজ ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্য পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ আমিনুর রহমান বলেন, ২১ মানে মাথা নত না করা। ১৯৭১ সালে রাও ফরমান আলী বলেছিল একটি দেশকে বা দেশের ভাষাকে নষ্ট করার জন্য ওই দেশের কবি, সাহিত্যিক, প্রফেসর, সাংবাদিকদের মেরে ফেলতে হবে। তাই সে আমাদের দেশের কবি সাহিত্যিকদের মেরে ফেলতে ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বর পযর্ন্ত হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল।
তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, তোমাদের প্রতি আমার বার্তা হল অস্ত্র ছাড়ি কলম ধরি, আলোকিত সমাজ গড়ি-এটাই হোক আজকের একুশের চেতনা। এর সাথে আরো সংযোজন করে বলেন-আজকে থেকে তিনটা ‘ম’ কে না বলি এবং তা হল মিথ্যাকে, মাদককে, মুখস্থকে। তিনি কবিতারছলে বলেন, “জ্বলছে আলো চলছে দেশ, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, শেখ হাসিনার মূলনীতি, গ্রাম শহরের উন্নতি”।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথিবৃন্দরা মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য্য তুলে ধরেন। এছাড়া মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণ ও আউটার স্টেডিয়ামসহ নগরীর বিভিন্ন উন্মুক্ত ও জনবহুল স্থানে ভাষা আন্দোলন সংশ্লিষ্ট সংবাদ, আলোকচিত্র তথ্য ও ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।