আজ থেকে ৩ বছর আগে দেশজুড়ে গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল পদ্মা ‘সেতুতে মাথা লাগবে’। এই গুজবের জেরেই ওই সময় ছেলেধরা সন্দেহে ঢাকায় স্থানীয় জনতার অতর্কিত হামলায় প্রাণ হারান লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার সোনাপুর গ্রামের তাসলিমা বেগম রেনু।
এটি সেই ঘটনা যে ঘটনা আমাকে সারারাত কাঁদিয়েছিলো। যে রাত আমি নির্ঘুম কাটিয়েছিলাম। আমি কোন রকম স্বস্তি ফিরে পাচ্ছিলাম না সেদিন। বারবার রেনু নামের মা’টির জায়গায় আমি আমার মা’কে খুঁজে পাচ্ছিলাম। শত চেষ্টাতেও আমি দুচোখ বন্ধ করতে পারিনি ওই রাত।
আমি আমার দেশকে ভালোবাসি। আমার দেশের মানুষকে ভালোবাসি। তবে কিছু কিছু কর্মকাণ্ডে আমার এদেশের মানুষের উপর এত যে ক্ষোভ তৈরি হয়.! সেটি লিখে বুঝাতে পারব না। কোন কিছু চিন্তা ভাবনা না করে যাচাই-বাচাই না করে হুট করে সবকিছুতে ঝাঁপিয়ে পড়া আমাদের মানুষ গুলোর স্বভাব।
“নিজেদের পরিবর্তন করতে হবে” এ কথাটি আমার মনে হয় না মন থেকে মেনে নেওয়ার জনগণ এদেশে খুব বেশি একটা পাওয়া যাবে। সবাই নিজেদের কাজ এবং মতামত কে যৌক্তিক এবং সঠিক বলে মনে করেন। নিজেদের দোষ থাকতে পারে এমন চিন্তা করা মানুষের সংখ্যাও খুব নগণ্য।
পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান এ নিয়ে অনেক কথাবার্তা এখন রাজনৈতিক মহলে হচ্ছে সেখানে আমি যেতে চাচ্ছি না। আমি চিন্তা করছি সেই বাচ্চা দুটির কথা যাদের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হারিয়েছে তারা, পদ্মাসেতুর কোন যোগসূত্র না থাকার পরও। তাদের কাছে পদ্মা সেতুর কি নাম হবে..? তারা কিভাবে দেখবে বাংলাদেশের এই সর্ব কালের সর্ব বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্পটিকে..? এ পদ্মাসেতু মানুষের যাতায়াত এর দূরত্ব কমিয়ে দেবে! পানিতে ডুবে মরার আর ঝুঁকি নেই বললে চলে ! কিন্তু ওই বাচ্চা দুটোর মা- সন্তানের যে ভালোবাসার সম্পর্ক সে দূরত্ব কি কমিয়ে আনা আর সম্ভব।