আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক নৌ মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান খান এমপি বলেছেন, ‘বিএনপির নেতারা বলছে আমরা গাড়ি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। আমরা গাড়ি বন্ধের নির্দেশ দেইনি। আপনারা যাঁদের গাড়ি পুড়িয়েছেন তারাই গাড়ি বের করতে ভয় পায়।’
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
নৌ মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনার গাড়ি বের করেন না কেন? তারা বলেছে, বিএনপি গাড়ি পোড়ায়-ভাঙচুর করে। বিএনপির ভয়ে গাড়ি বের হয়না। গাড়ির একটা গ্লাসের দাম এক মাসেও আয় হয় না। তাই গাড়ি বের করি না।’
এসময় তিনি বলেন, বিএনপি বলছে আমরা কেন সমাবেশ করছি, প্রতিবাদ করছি। তারা ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চায়। ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেব না, খেলতে যখন নেমেছেন দুই দলই খেলবে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ প্রাচীন তম দল, মুক্তিযোদ্ধার দল, দেশ প্রেমিকের দল। সন্ত্রাসীদের দল আওয়ামী লীগ নয়। অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছে। অনেকেই চেষ্টা করেছে আওয়ামী লীগের শেকড় উপড়ে ফেলতে। যারাই ক্ষমতায় আসে তাদের উদ্দেশ্যই থাকে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার।
তিনি বলেন, সেই জামায়াতী যুদ্ধাপরাধী নিজামী মুজাহিদের হাতে পতাকা তুলে দিয়েছিলো বিএনপি। আরেকজন হচ্ছেন সাকা চৌধুরী। কী বিকৃতভাবে কথা বলতেন। যুদ্ধাপরাধের দায়ে তাঁদের বিচার হয়েছে। বিএনপি চুপ ছিলো। কারণ বিএনপি জানে ওরা রাজাকার।
এর আগে সকাল ১১টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি।
তিনি বক্তব্যে বলেছেন, আওয়ামী লীগের প্রতি মানুষের নিরঙ্কুশ সমর্থন আছে। গত ৪ ডিসেম্বর আপনারা দেখেছেন চট্টগ্রামের স্মরণকালের সমাবেশ। চট্টগ্রাম ৮ আসনের উপ-নির্বাচনে মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন।
এমপি মোছলেম উদ্দিন বলেন, একটি জাল ভোটও কেউ দেয়নি। সামগ্রিক ভাবে এলাকার উন্নয়ন করেছি। যদিও আমি করোনার এমপি। তারপরও যতটুকু পেরেছি রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করে গেছি। দিন রাত নামাজ পড়ার সময় আল্লাহকে বলছি আমাকে হায়াত দেন, যাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়ে কালুরঘাট নতুন সেতুর উদ্বোধন করে যেতে পারি। কালুরঘাট নতুন সেতু এখন স্বপ্ন নয়, বাস্তব।
কালুরঘাট সেতু প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের অন্যতম প্রকল্প উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেকে ফেসবুকে বলছেন সেতুর জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে। এ সেতুর জন্য আন্দোলন করতে হয়নি। এটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের অন্যতম প্রকল্প। ২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে সেতুটি নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর করা হবে। আগামী নির্বাচনে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৬টি আসন প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়া হবে।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে আওয়ামী লীগ অন্যায় শোষণের বিরুদ্ধে লড়েছে। প্রায় ২৪ বছর পর বোয়ালখালী আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে। ২৪ বছর পরে হলেও সম্ভব হয়েছে। সম্মেলন করা গেলে অনেক নতুন নেতৃত্ব পেতাম। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ধর্য্য ধারণ করেছেন। সরে যাননি। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ত্যাগের রাজনীতি করেন, ভোগের রাজনীতি করেন না। ১০ ডিসেম্বর নগরে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। সমঝোতার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী আদর্শিক কমিটি গড়তে চাই। তাই সমঝোতার বিকল্প নেই।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এসএম আবুল কালাম, মোতাহেরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ দাশ, এ্যাড. জহির উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরীসহ জেলা উপজেলা নেতৃবৃন্দ ।এসময় আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।