চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে জোর লবিংয়ে ব্যস্ত মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে নিজের অবস্থান, ত্যাগ-তিতিক্ষা ও জেল-জুলুমের চিত্র তুলে ধরছেন নানাভাবে। এ দৌড়ে আছেন ব্যবসায়ী নেতা থেকে শুরু করে দলের তরুণ নেতারাও। তপশিল ঘোষণার পর থেকে ঢাকাসহ নানা স্থানে ছোটাছুটিতে ব্যস্ত মনোনয়নপ্রত্যাশীরা।
জানা গেছে, নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থীর শক্ত অবস্থান, চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর সফল জনসভায় সম্পৃক্ততা ও আগামী জাতীয় নির্বাচন বিবেচনায় এ দৌড়ে এগিয়ে আছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সিটি মেয়র ও ক্রীড়া সংগঠক আ জ ম নাছির উদ্দীন। এ ছাড়া মনোনয়ন দৌড়ে আলোচনায় আছেন নগর আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক ও সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, আওয়ামী লীগ নেতা সুকুমার চৌধুরীসহ আরও কয়েকজন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী তপশিল ঘোষণার পর পরই ব্যাপক তোড়জোড় শুরু করেছেন সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। দলীয় নেতাদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ে আছেন ব্যবসায়ী নেতা ও ১৪ দলীয় জোটের শরিক নেতারাও। তবে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এ আসনে সাংগঠনিক ভিত্তি শক্ত করার জন্য যোগ্য ও ত্যাগী নেতাকে মূল্যায়ন করা হতে পারে।
স্থানীয় অনেক নেতা বলছেন, মনোনয়ন আওয়ামী লীগ থেকে কেউ পাবেন নাকি জোট থেকে প্রার্থী দেওয়া হবে, তা নির্ভর করছে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর। চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর সফল জনসভা, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং আন্দোলন-সংগ্রামসহ নানা বিষয় বিবেচনায় শক্ত ও যোগ্য প্রার্থী হিসেবে আ জ ম নাছির উদ্দিন এগিয়ে আছেন। এ ছাড়া সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম এবং জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ-বাংলাদেশের সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা সুকুমার চৌধুরী জোর লবিং চালাচ্ছেন। এর বাইরে তৃণমূলের আলোচনায় সাবেক রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালামের নাম উঠে এলেও দীর্ঘদিন রাজনীতির মাঠে না থাকায় তার মনোনয়নপ্রত্যাশা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে শীর্ষ মহলে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আগামীর পরিকল্পনা ও বিভিন্ন লক্ষ্য ঘিরে এবার আলোচনায় নতুন করে স্থান পেয়েছেন প্রবীণদের পাশাপাশি কিছু তরুণ নেতাও।
এর মধ্যে আলোচনায় আছেন বিজিএমইএর পরিচালক ও সমাজসেবক এম এ ছালাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দিন আহমেদের স্ত্রী শিরিন আহমেদ, সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির বড় ছেলে মুজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপকমিটির সদস্য, সাবেক ছাত্রনেতা আরশেদুল আলম বাচ্চু, আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ব্যারিস্টার এস এম কফিল উদ্দিন, আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক উপকমিটির সাবেক সদস্য এম হায়দার আলী প্রমুখ। বাদ পড়েননি প্রয়াত জাসদ নেতা ও সংসদ সদস্য মঈন উদ্দীন খান বাদলের স্ত্রী সেলিনা খানও।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করে যাচ্ছি। তিনি নির্বাচন করতে নির্দেশ দিলে অবশ্যই করব। দল যখন যে দায়িত্ব আমাকে দিয়েছে, আমি যথাযথভাবে তা পালন করেছি।’ সিটি করপোরেশন এলাকায় চট্টগ্রাম-৮ আসনের প্রায় ৭৫ শতাংশের ওপরে ভোটার এবং ২৫ শতাংশ ভোটার বোয়ালখালীর বলে স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।
জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ-বাংলাদেশের সভাপতি সুকুমার চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এবার এ বৃহৎ সংগঠনের দলীয় প্রতীক নৌকার মাঝি হতে চাই। দলের জন্য ত্যাগসহ নানা বিষয় বিবেচনায় আশা করি মনোনয়ন পাব।’
আগামী ২৭ এপ্রিল এ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। তবে ভোটকক্ষে সিসি ক্যামেরা থাকবে না। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৭ মার্চ। যাচাই-বাছাই ২৯ মার্চ। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ৫ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ৬ এপ্রিল। রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান।
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা, মহানগরীর চান্দগাঁও ও পাঁচলাইশের কিছু অংশ নিয়ে চট্টগ্রাম-৮ সংসদীয় আসন গঠিত। গত ৫ ফেব্রুয়ারি এ আসনের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দিন আহমেদ মারা যান। এরপর আসনটি শূন্য হলে উপনির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
ই-মেইল:
[email protected],
[email protected]
প্রথম
তলা, হোল্ডিং নং# ১৩৮১ (হাজী মার্কেটের পাশে) খন্দকার বাড়ির মোর,ঢাকা-১২১২,বাংলাদেশ।